অফিস ডেস্ক
মোঃমামুন হাওলাদার শিমুল ইন্দুরকানী প্রতিনিধি:-পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় পারিবারিক জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে চাচার দায়ের কোপে সোহাগ বৌদ্ধ (৩০) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে।
আহত সোহাগ বর্তমানে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আহত সোহাগ বৌদ্ধ তার পিতার রেখে যাওয়া জমিতে থাকা নিজস্ব সুপারি বাগানে সুপারি পাড়ছিলেন। এ সময় তার চাচা দ্বিজোলাল বৌদ্ধ জমিটি নিজের দাবি করে তাকে সুপারি পাড়তে বাধা দেন। এতে উভয়ের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজনা বেড়ে গেলে চাচা দুলাল বৌদ্ধর ইন্ধনে দ্বিজোলাল বৌদ্ধ হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে সোহাগের মাথা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সোহাগ।
স্থানীয়রা এগিয়ে এসে গুরুতর আহত সোহাগকে উদ্ধার করে দ্রুত পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
আহত সোহাগ বৌদ্ধ জানান, তার পিতা হিরোলাল বৌদ্ধ প্রায় ২০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। তখন থেকেই চাচা দুলাল বৌদ্ধ ও দ্বিজোলাল বৌদ্ধ তাদের বাবার রেখে যাওয়া জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে রেখেছেন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার শালিসি বৈঠক হলেও তারা জমি বুঝিয়ে দেননি। তারা আমার মায়ের কেনা জমি দখল করেছেন।
সোহাগ বলেন, “আমি যে জমি পেয়েছি সেই জমিতেই সুপারি পাড়ছিলাম। হঠাৎ চাচা এসে জমি নিজের দাবি করে বাধা দেয়। পরে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতে থাকা দা দিয়ে আমার মাথায় ও শরীরের উপর একের পর এক কোপ দেয়। আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছি।”তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলার পর তারা তার ঘর ভাঙচুর করে এবং ঘরের ভিতর থাকা সুপারি ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত দুলাল বৌদ্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাতিজা সোহাগকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। হুমকি-ধুমকি ও হামলা করে তাকে হয়রানির চেষ্টা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এক সময় সোহাগ বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান বলেও জানান তারা।
ঘটনার পর অভিযুক্ত দ্বিজোলাল বৌদ্ধের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাবাসীর অনেকেই জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বলেন,“বিষয়টি আমরা জেনেছি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মোঃমামুন হাওলাদার শিমুল