অফিস ডেস্ক
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,দিনাজপুর প্রতিবেদক:-দিনাজপুরের হিলিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুররা।
রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত থামেনি। এতে পুরো হিলি পৌর এলাকা, স্থলবন্দর এলাকা ও আশপাশের গ্রামীণ সড়কগুলো কাদা-পানিতে একাকার হয়ে গেছে।
বৃষ্টির কারণে বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ, ইটভাটা, বাজারঘাটের মালামাল ওঠানামা-সবকিছু। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সেইসব দিনমজুররা, যারা প্রতিদিনের শ্রম বিক্রি করে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেন।
হিলি বাজার এলাকার দিনমজুর আবদুল হক (৪৫) বলেন, ভাই সকাল থেকে এখন পর্যন্ত একটাও কাজ পাইনি। সারারাত ঠিকমতো ঘুম হয়নি, ভাবছিলাম সকালে কাজে যাব, কিছু টাকা রোজগার করব। কিন্তু এই বৃষ্টিতে কে কাজ দেবে? ঘরে স্ত্রী-সন্তান অপেক্ষা করছে ভাতের জন্য, কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছি না। মনে হয়, আজ আবার না খেয়ে থাকতে হবে।
বোয়াদার এলাকার দিনমজুর রহিম উদ্দিন (৫০) আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো মানুষের জীবনে রোদ-বৃষ্টি মানে কষ্ট। কাজ থাকলে খাই, না থাকলে উপোস। বৃষ্টিতে কাজ বন্ধ মানে আমাদের ঘরে চুলা বন্ধ। সরকার বন্যা-দুর্যোগে সাহায্য দেয়, কিন্তু এইরকম বৃষ্টির দিনেও তো আমরা না খেয়ে থাকি। এই কষ্ট কেউ বোঝে না।
আরেক দিনমজুর সালাম উদ্দিন (৩৮) বলেন,
বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট কাদা, কেউ কাজ দিতে চায় না। বাজারে গিয়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম, কেউ ডাকে নাই। ঘরে বাচ্চা দুটো দুধ খেতে চায়, কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারছি না। এই কষ্টের জীবন কবে শেষ হবে জানি না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সোহেল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে বাজার ফাঁকা। দিনমজুররা কাজ পাচ্ছেন না, অনেকেই দোকানের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। মানুষের মুখে শুধু একটা কথা আজ কাজ নাই, ভাতও নাই।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন জানান, গতকাল (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে আজ (রবিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত দিনাজপুরে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।