ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধাঃ-গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া খালের ওপর ৩৪ লাখ টাকায় নির্মিত দীর্ঘ প্রত্যাশিত সেতুটির দুপাশে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়ক। নিরুপায় হয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। ফলে প্রত্যাশিত সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। এ জন্য ঠিকাদার ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া খালের ওপর সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুই প্রান্তে গভীর গর্ত মাটি দিয়ে পূরণ না করার কারণে এটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা সেতুর দুই পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন।
সময়ের ব্যবধানে সেটিও এখন নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যানবাহন তো দূরে থাক, হেঁটে পারাপারও ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকোর ওপর দিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণীপেশার মানুষ। এর মধ্যে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঠিকাদার ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণেই এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মিত না হওয়ায় গ্রামবাসী মিলে বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী সংযোগ দিয়েছে। বাঁশের সাঁকোতে হেঁটে কোনোভাবে পারাপার করা গেলেএ যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ পণ্য পরিবহন করতে পারে না। বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ার ভয় নিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ করতে হয় শিক্ষার্থীদের।
পিআইও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৩৪ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। কিন্তু বাস্তবে সেতুর নির্মাণ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। এর মধ্যেই প্রায় ২৩ লাখ টাকা তোলা হয় বলে জানা গেছে।
অভিযোগ আছে, টেন্ডারে কাজ পেলেও প্রকৃতপক্ষে আইকন কনট্রাকশনের পরিবর্তে স্থানীয় ঠিকাদার গোলাম মওলাই কাজটি সম্পন্ন করেন। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করেই প্রকল্প গুটিয়ে নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পিআইও মশিয়ার রহমান কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, 'বিষয়টি অবগত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ দায়িত্বে অবহেলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। '
এদিকে, সেতুর ঠিকাদার আইকন কনট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর শামিম বলেন, 'কাজটি মূলত পার্টনার হিসেবে গোলাম মওলা করেছেন। সংযোগ সড়ক হয়নি বিষয়টি সম্প্রতি জেনেছি। দ্রুত মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে। '