অফিস ডেস্ক
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম,দিনাজপুর প্রতিবেদক:-কালীপূজা ঘনিয়ে আসতেই দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি বাজারে জমে উঠেছে পূজার সামগ্রী বিক্রির হাট।
বিশেষ করে বাসনপট্টি এলাকায় দেখা গেছে ধূপদানী, দিওরি (মাটির প্রদীপ) ও শোলার তৈরি কদম ফুল কেনাবেচার ব্যস্ততা। এসব পূজার সরঞ্জাম বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্যামা পূজা বা কালীপূজা আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে। পূজাকে কেন্দ্র করে হিলি বাজারসহ আশপাশের এলাকা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বাসনপট্টি এলাকায় দেখা গেছে সব বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কেউ কিনছেন বাড়ির সাজসজ্জার জন্য দিওরি, কেউ আবার পূজামণ্ডপ সাজানোর জন্য ধূপদানী আর কদম ফুল।
স্থানীয়রা জানান, পূজার আগের দিন থেকেই হিলি বাজারের বাসনপট্টি এলাকায় পূজার সাজসামগ্রী কেনার জন্য মানুষের ঢল নামে। সাধারণত সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার এখানে হাট বসে। তবে কালীপূজাকে কেন্দ্র করে সোমবারও বাজার ছিল সরগরম। প্রতিটি দোকানের সামনে সাজানো ছিল সারি সারি মাটির তৈরি ধূপদানী আর প্রদীপ।
ধূপদানী বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ টাকা, দিওরি (মাটির প্রদীপ) প্রতিটি মাত্র ২ টাকা এবং শোলার তৈরি কদম ফুল প্রতিটি ১০ টাকায়। তবে প্রতিটি জিনিসের দামই গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি বলে জানান ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচামাল ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
ধূপদানী ও দিওরি কিনতে আসা মধু সুদন চন্দ্র রায় বলেন, আজ আমাদের কালীপূজা। সন্ধ্যার আগেই বাড়ি-ঘর আলোকসজ্জা করতে হবে। তাই ২ টাকা দরে ১০০টি দিওরি কিনলাম। এছাড়া মণ্ডপে ধূপ জ্বালানোর জন্য ৩০ টাকায় ধূপদানীও নিয়েছি। দাম একটু বেশি হলেও পূজার জিনিসে দরদাম করি না। ভক্তির জায়গাটাই এখানে বড়।
আরেক ক্রেতা জগদীশ চন্দ্র দাস বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি। তবুও উৎসব তো বছরে একবারই আসে। ভক্তিভরে পূজা করতে যা লাগে সবই কিনতে হচ্ছে। প্রয়োজনে একটু কষ্ট করেই কিনি।
স্থানীয় মৃৎশিল্পী ও ব্যবসায়ী নীরেন পাল জানান, কালীপূজা, দুর্গাপূজা আর লক্ষ্মীপূজাকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যবসা ভালো থাকে। ধূপদানী, দিওরি আর কদম ফুলের সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে এই সময়ে। কয়েকদিন ধরে ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে এবছর কাঁচামালের দাম বেশি হওয়ায় লাভ ততটা হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মাটির কারুকাজের পণ্য এখন অনেকেই আগের মতো ব্যবহার করে না। তারপরও আমরা পৈতৃক ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি। পূজার মৌসুম এলেই মনটা ভরে যায়। কারণ তখনই আসলে আমরা কাজের মূল্য পাই।
কালীপূজাকে কেন্দ্র করে পুরো হিলি পৌর এলাকা এখন সাজসজ্জার রঙে রঙিন। পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, আর বাজারে চলছে ক্রেতাদের ভিড়।