পৃথিবীতে আমার কোনও ওয়ারিশ নেই’-ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকারের


পলাশবাড়ী(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:-জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পীর একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে গাইবান্ধা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
 

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন।
 

“আমি দিলারা খন্দকার(ব্যারিস্টার অ্যাট ল’),মাতা-মৃত স্বপ্না খন্দকার, পিতা মৃত খন্দকার ওসমান গনি দুলু। পৃথিবীতে আমার কোনো ওয়ারিশ নেই। আমার মৃত্যুর পর যা কিছু সম্পদ আছে, তার ওছিয়তনামা আমি করে রেখেছি। আমার কবর হবে আমার বাড়ি ‘ইধৎৎরংঃবৎ’ং ঐড়ঁংব’-এর পূর্ব পাশে।
 

বিঃ দ্রঃ আমার মৃত্যুর পর আমার ভাই আবু বকর সিদ্দিক পলাশ আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না, দাফনে অংশ নিতে পারবে না, কবরে মাটি দিতে পারবে না।”
এই স্ট্যাটাসটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। কেউ বিষয়টিকে পারিবারিক দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ব্যারিস্টারের মানসিক অবস্থা নিয়ে।
 

রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর–পলাশবাড়ী) আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পার্টি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তা প্রত্যাহার করেন।
 

২০০৭ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করে দেশে ফিরে তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হন এবং ২০১১ সালে হাইকোর্টে প্র্যাকটিসের অনুমতি পান।
 

তার বাবা খন্দকার ওসমান গনি দুলু ছিলেন পলাশবাড়ীর প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি স্থানীয়ভাবে পরিচিত “শিল্পী ভোজনালয়”-এর মালিক ছিলেন। ২০২৪ সালের ফেব্রয়ারিতে তিনি মারা যান। এর ৪০ দিন আগে মারা যান দিলারার মা স্বপ্না খন্দকার।
 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে খন্দকার দুলু নিজের সম্পদ ছেলে আবু বকর সিদ্দিক পলাশ ও মেয়ে দিলারা খন্দকারের মধ্যে দলিলমূলে ভাগ করে দেন। তবে পরবর্তীতে সম্পত্তি নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দিলারা খন্দকার আদালতে মামলা করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর থেকেই দুই ভাই-বোনের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে নানা ঘটনা আলোচনায় আসে।
 

স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন,
“যা ঘটেছে, সেটাই জানাতে চেয়েছি। এর বাইরে কিছু বলার নেই।”
 

অন্যদিকে, ভাই আবু বকর সিদ্দিক পলাশ বলেন,
“আমরা দুই ভাই-বোনই বাবা-মায়ের আদরের সন্তান। মৃত্যুর আগে বাবা সম্পদ বণ্টন করে গেছেন। 

 

তারপরও আপার সঙ্গে কিছু ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেছে, যা সমাধানের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।”
ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকারের এই স্ট্যাটাস এখন গাইবান্ধার রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
 

জাতীয় পার্টির এই সাবেক নেত্রী টেলিভিশনের বিভিন্ন টকশোতেও আলোচিত ছিলেন। দলের প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাধিকবার তার পলাশবাড়ীর বাসভবনে সফর করেছিলেন।
এরশাদের মৃত্যুর পর তিনি জাতীয় পার্টির নতুন কমিটিতে পদ না পেয়ে ২০২০ সালে “জাতীয় পল্লী পার্টি” নামে নতুন রাজনৈতিক সংগঠন গঠন করেন, যা এরশাদের “পল্লীবন্ধু” উপাধির সঙ্গে মিল রেখে নামকরণ করা হয়।
 

শিক্ষাজীবনে ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার পলাশবাড়ী পিয়ারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, পলাশবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে লন্ডনে গিয়ে এ-লেভেল, আইন বিষয়ে ডিপ্লোমা, এলএলবি ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং “লিংকনস ইন” থেকে বার-অ্যাট-ল অর্জন করেন।
 


প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকঃ মোঃ নুরুল ইসলাম ওমর, সাবেক এমপি ও বিরোধী দলীয় হুইপ, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মাক্সুদুল আলম হাওলাদার

নির্বাহী সম্পাদকঃ এম নজরুল ইসলাম

ফোনঃ ০১৭১৭০১৬১৩০

যোগাযোগঃ অফিসঃ সাতমাথা, বগুড়া গাজীপুর অফিসঃ সিলমন, টঙ্গি, গাজীপুর

© 71 Vision ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ অনুমতি ব্যতীত কোন সংবাদ বা ছবি প্রকাশ বা ব্যবহার করা যাবে না।